ঢাকা ০৭:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ আঘাত হানতে পারে বুধবার

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:২২:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৬৬ বার পড়া হয়েছে
NEWS396 অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দেশের তিনটি সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সারা দেশে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’-এ রূপ নিয়েছে। আগামীকাল বুধবার দুপুরের মধ্যে তা উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্টি হওয়া মেঘমালার অগ্রভাগ বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবেশ করেছে। যার প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আজ মঙ্গলবার ও কাল বুধবার উপকূলসহ সারা দেশে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দেশের তিনটি বন্দর এবং কক্সবাজার উপকূলকে ৪ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় হামুনের পূর্বাভাসে এসব কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৬৭০ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ–পশ্চিম এবং মোংলা ও পায়রা বন্দর থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর ও উত্তর–পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। এটি ঘণ্টায় ১৪ কিলোমিটার গতিতে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও বরিশাল উপকূলের দিকে এগোচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, হামুনের প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গতকালই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। রাজধানীতে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হয়েছে দেশের উপকূলীয় এলাকায়ও।পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে পড়েছে। উপকূলের নৌযান এবং মাছ ধরার নৌকাগুলোকে উপকূলের নিরাপদ স্থানে থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাগরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক গতকাল রাতে জানান, গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’-এ পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে বিপুল মেঘমালাও তৈরি হয়েছে। যার অগ্রভাগ বাংলাদেশের উপকূলে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ফলে রাত (গত রাত) থেকে উপকূলসহ সারা দেশে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, হামুনের প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গতকালই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। রাজধানীতে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হয়েছে দেশের উপকূলীয় এলাকায়ও।

আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, এর আগের শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘সিডর’ ও ‘আইলা’র সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় হামুনের বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে। আগের ঘূর্ণিঝড়গুলো বাংলাদেশের উপকূল থেকে গড়ে এক হাজার কিলোমিটার দূরে সৃষ্টি হয়। পাঁচ থেকে সাত দিন ধরে শক্তি অর্জন করতে করতে তা উপকূলের দিকে আসে। ফলে সেগুলোর শক্তি ও বাতাসের গতি ছিল বেশি। তবে হামুন বাংলাদেশের উপকূল থেকে ৬০০ কিলোমিটারের মতো দূরে সৃষ্টি হয়েছে। এটি দ্রুত (ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার) উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। ফলে এই ঘূর্ণিঝড় তীব্র শক্তি অর্জনের জন্য পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছে না।

গতিমুখ অনুযায়ী হামুন চট্টগ্রাম ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার মাঝখান দিয়ে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তবে এটি শেষ পর্যন্ত আঘাত হানবে কি না, তা নিশ্চিত করেননি ভারতের আবহাওয়াবিদেরা। ঘূর্ণিঝড় হামুনের বিষয়ে পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগও (আইএমডি)। গতকাল সন্ধ্যায় আইএমডির দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, গতকাল রাতের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করার কথা। গতিমুখ অনুযায়ী হামুন চট্টগ্রাম ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার মাঝখান দিয়ে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তবে এটি শেষ পর্যন্ত আঘাত হানবে কি না, তা নিশ্চিত করেননি ভারতের আবহাওয়াবিদেরা।

আরব সাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘তেজ’ ভারতীয় উপকূল থেকে আরও দূরে সরে গিয়ে ইয়েমেন ও ওমান উপকূলের দিকে এগোচ্ছে। আজ তা ওই দুটি দেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তবে এর প্রভাব বাংলাদেশে খুব বেশি পড়বে না বলে মনে করছেন বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদেরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ আঘাত হানতে পারে বুধবার

আপডেট সময় : ১০:২২:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৩

দেশের তিনটি সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সারা দেশে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’-এ রূপ নিয়েছে। আগামীকাল বুধবার দুপুরের মধ্যে তা উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্টি হওয়া মেঘমালার অগ্রভাগ বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবেশ করেছে। যার প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আজ মঙ্গলবার ও কাল বুধবার উপকূলসহ সারা দেশে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দেশের তিনটি বন্দর এবং কক্সবাজার উপকূলকে ৪ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় হামুনের পূর্বাভাসে এসব কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৬৭০ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ–পশ্চিম এবং মোংলা ও পায়রা বন্দর থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর ও উত্তর–পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। এটি ঘণ্টায় ১৪ কিলোমিটার গতিতে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও বরিশাল উপকূলের দিকে এগোচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, হামুনের প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গতকালই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। রাজধানীতে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হয়েছে দেশের উপকূলীয় এলাকায়ও।পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে পড়েছে। উপকূলের নৌযান এবং মাছ ধরার নৌকাগুলোকে উপকূলের নিরাপদ স্থানে থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাগরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক গতকাল রাতে জানান, গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’-এ পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে বিপুল মেঘমালাও তৈরি হয়েছে। যার অগ্রভাগ বাংলাদেশের উপকূলে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ফলে রাত (গত রাত) থেকে উপকূলসহ সারা দেশে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, হামুনের প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গতকালই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। রাজধানীতে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হয়েছে দেশের উপকূলীয় এলাকায়ও।

আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, এর আগের শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘সিডর’ ও ‘আইলা’র সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় হামুনের বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে। আগের ঘূর্ণিঝড়গুলো বাংলাদেশের উপকূল থেকে গড়ে এক হাজার কিলোমিটার দূরে সৃষ্টি হয়। পাঁচ থেকে সাত দিন ধরে শক্তি অর্জন করতে করতে তা উপকূলের দিকে আসে। ফলে সেগুলোর শক্তি ও বাতাসের গতি ছিল বেশি। তবে হামুন বাংলাদেশের উপকূল থেকে ৬০০ কিলোমিটারের মতো দূরে সৃষ্টি হয়েছে। এটি দ্রুত (ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার) উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। ফলে এই ঘূর্ণিঝড় তীব্র শক্তি অর্জনের জন্য পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছে না।

গতিমুখ অনুযায়ী হামুন চট্টগ্রাম ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার মাঝখান দিয়ে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তবে এটি শেষ পর্যন্ত আঘাত হানবে কি না, তা নিশ্চিত করেননি ভারতের আবহাওয়াবিদেরা। ঘূর্ণিঝড় হামুনের বিষয়ে পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগও (আইএমডি)। গতকাল সন্ধ্যায় আইএমডির দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, গতকাল রাতের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করার কথা। গতিমুখ অনুযায়ী হামুন চট্টগ্রাম ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার মাঝখান দিয়ে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তবে এটি শেষ পর্যন্ত আঘাত হানবে কি না, তা নিশ্চিত করেননি ভারতের আবহাওয়াবিদেরা।

আরব সাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘তেজ’ ভারতীয় উপকূল থেকে আরও দূরে সরে গিয়ে ইয়েমেন ও ওমান উপকূলের দিকে এগোচ্ছে। আজ তা ওই দুটি দেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তবে এর প্রভাব বাংলাদেশে খুব বেশি পড়বে না বলে মনে করছেন বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদেরা।