বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ দ্বিগুণ বেড়েছে
- আপডেট সময় : ০৯:০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ ২০২৪ ১৪৭ বার পড়া হয়েছে
ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে সবচেয়ে বেশি প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে এডিবির কাছ থেকে।
ইআরডির তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বৈদেশিক অর্থ ছাড় হয়েছে ৪৯৯.৭ কোটি ডলার। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে অর্থ ছাড়ের পরিমাণ ছিল ৪৮৭ কোটি ডলার। এই সময় সবচেয়ে বেশি অর্থ ছাড় করেছে এডিবি।
গত অর্থবছরে (জুলাই-জুন) বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের পরিশোধ করেছে ২৬৭ কোটি ডলার। এর মধ্যে সুদ হিসেবে পরিশোধ করেছে ৯৩ কোটি ৫৬ লাখ, আর আসল পরিশোধ করেছে ১৭৩ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরে পরিশোধ বেড়ে হবে ৩৫৬ কোটি ডলার। আগামী দুই অর্থবছরে তা আরো বেড়ে হবে যথাক্রমে ৪২১ কোটি ও ৪৭২ কোটি ডলার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সরকার কঠিন শর্তের ঋণের পরিমাণ বাড়িয়েছে। ওই সব ঋণের রেয়াতকাল (গ্রস পিরিয়ড) শেষ হয়ে আসছে। ফলে আসল ও সুদ উভয়েই পরিশোধ করতে হচ্ছে এখন। যে কারণে বিদেশি ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা ২০২২ সালেই বলেছিলাম, বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ পরিস্থিতি বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। আমরা এ-ও বলেছিলাম, ২০২৪ সালের পর থেকে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হবে, যা রিজার্ভের ওপর অনেক বেশি বিরূপ প্রভাব ফেলবে। কিন্তু আমাদের সেই বক্তব্যকে সরকারের নীতিপ্রণেতারা তখন গুরুত্ব দেননি এবং নানা যুক্তি দিয়ে তাঁরা বুঝিয়েছিলেন, বিদেশি ঋণ নিয়ে বাংলাদেশের কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু প্রকৃত অর্থে এখন সমস্যা হচ্ছে এবং ঋণ পরিশোধের চাপ সামলানোর জন্য আমদানি সংকোচন করতে হচ্ছে। এ পরিস্থিতির জন্য ওই সব নীতিপ্রণেতাই দায়ী। এখন তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।’
বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ বাড়ার বিষয়ে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আগে বিশ্বব্যাংক-এডিবি থেকে আমরা ফিক্সড রেটে ঋণ পেতাম। এখন সেটা কমছে, যার কারণে আমাদের বাজারভিত্তিক সুদহারের ঋণ নিতে হচ্ছে। এই ঋণের কারণে শুধু সুদ পরিশোধের চাপ বাড়বে না, একই সঙ্গে আসল পরিশোধেও চাপ বাড়বে। কারণ বাজারভিত্তিক সুদহারের ঋণ পরিশোধের সময় কম থাকে। এ অবস্থায় বাজারভিত্তিক সুদহারের ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারকে সতর্ক হতে হবে। যেসব প্রকল্পে রিটার্ন আসবে না, সেসব প্রকল্প না নেওয়ায়ই ভালো।’
ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে কমেছে বৈদেশিক ঋণ ছাড়ের পরিমাণ। এদিকে গত অর্থবছর থেকে বেড়েছে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ। আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৭০ কোটি ডলার বৈদেশিক ঋণ ছাড় কম হয়েছে। এদিকে আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ৭৩ কোটি ডলার।