ভারতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নামাজ পড়ায় সময় বিদেশী ৫ শিক্ষার্থীকে নির্মম নির্যাতন
- আপডেট সময় : ০১:০৪:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪ ১৪২ বার পড়া হয়েছে
জাতিসংঘে ভোট দানে বিরত থাকার দিন ভারতে গুজরাটে আবারও মুসলিম নির্যাতনের ঘটনা ঘটলো। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তীব্র ক্ষোভে সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে এআরসি (মুসলিম বিরোধী আইন) পাশ অন্যদিকে বিদেশী ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে মুসলিমদের ভেতর। এর আগে গত শুক্রবার জুমার দিন দিল্লিতে নামাজ পড়ার সময় এক পুলিশ সদস্য নামাতরত মুসলিদের লাথি মেরে রাস্তার ওপর থেকে সরিয়ে দেয়।
নামাজ আদায়কে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত ভারতের গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস। গভীর রাতের পাঁচজন বিদেশী শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ওই পাঁচ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগ উঠেছে, ক্যাম্পাসে নামাজ আদায়ে আপত্তি তুলে পাঁচ শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালানো হয়েছিল। আহত ছাত্ররা উজবেকিস্তান, আফগানিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং শ্রীলঙ্কার নাগরিক।
শনিবার স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা নিজেদের রুমেই নামাজ পড়ছিলেন। ওই সময় একদল লোক নামাজ পড়ার প্রতিবাদ জানান এবং চেঁচাতে শুরু করেন। ওই লোকরা নিজেরাও ধর্মীয় স্লোগান দিতে শুরু করে। এরপরই দু’পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয় এবং পরে তা সংঘর্ষে পরিণত হয়।
জানা গেছে, আমবাদে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ব্লক ‘এ’-তে এ ঘটনা ঘটে। সেখানেই বিদেশী শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস আছে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে আমদাবাদের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ দমন) নীরজকুমার বদগুজর জানান, ইতোমধ্যে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এফআইআর রুজু করা হয়েছে। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন। আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে একজন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা।
আহত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঝামেলা শুরুর সাথে সাথে পুলিশকে খবর দেয়া হলেও হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরে পুলিশ সেখানে এসে পৌঁছায়। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আহত শিক্ষার্থীদের ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। দেখা যায়, ঘটনায় অন্তত পাঁচটি বাইক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
এদিকে ছাত্রাবাসের এক শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গত রাত ১১টার দিকে বাইরে থেকে ১০ থেকে ১৫ জন আমাদের হোস্টেল ক্যাম্পাসে আসে। আমরা নামাজ আদায়ের সময় তাদের মধ্যে তিনজন আমাদের হোস্টেল ভবনে প্রবেশ করে। তারা আমাদের বলে যেন আমরা নামাজ আদায় না করি। এরপর জয় শ্রী রাম স্লোগান দিতে শুরু করে তারা। তারা নিরাপত্তারক্ষীকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় এবং তারপর নামাজ আদায় করা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। অন্যান্য অমুসলিম বিদেশী ছাত্ররা আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে। তখন তারাও হামলার শিকার হয়। তাদের ঘরে ভাঙচুর চালানো হয়। তাদের ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও আয়না ভাঙচুর করা হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার দু’জন এবং আফগানিস্তান, উজবেকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার এক শিক্ষার্থী এই হামলায় আহত হন।’ সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস